হনুমান চালিশা (Hanuman Chalisa In Bengali) | হনুমান চল্লিশা (হিন্দিতে হনুমান চালিসা) হল ভগবান হনুমানকে উৎসর্গ করা বিশ্বব্যাপী হিন্দুদের মধ্যে খুব জনপ্রিয় একটি হিন্দু ভক্তিমূলক স্তোত্র। ষোড়শ শতকের ভারতীয় কবি তুলসীদাস এটি আওয়াধি ভাষায় লিখেছিলেন, যিনি ভগবান রাম এবং হনুমানের ভক্ত ছিলেন। ভক্তিমূলক সাহিত্যের মতো, তুলসীদাস তাঁর গুরুর প্রশংসা করে দুটি দোহা দিয়ে কবিতাটি শুরু করেন:
তাঁর এই রচনাটিতে তেতাল্লিশটি আয়াত রয়েছে যার মধ্যে দুটি প্রারম্ভিক দোহা, চল্লিশটি চৌপাই এবং একটি অন্তিম দোহা। হনুমান চালিসায় "চালিসা" শব্দটি "চালিস" থেকে উদ্ভূত হয়েছে, যার অর্থ চল্লিশ সংখ্যা। কারণ, হনুমান চালিসায় শুরুতে দুটি দোহা এবং শেষের একটি দোহা বাদ দিলে ৪০ টি শ্লোক রয়েছে।
সম্পূর্ণ হনুমান চালিশা বাংলা (Hanuman Chalisa In Bengali)
হনুমানজীর সংক্ষিপ্ত জন্ম-কাহিনী
ভগবান হনুমানের জন্ম নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত আছে। একটি পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, তিনি বায়ু-দেবতা বায়ুর (পবন দেব) পুত্র ছিলেন, অনেকে দাবি করেন যে তাঁর পিতা ছিলেন কেশরী। কিন্তু ঋষি কর্তৃক অভিশপ্ত অঞ্জনা যে তাঁর মা ছিলেন, তা নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই।
অঞ্জনা ভগবান শিবের কাছে ১২ বছর ধরে প্রার্থনা করেছিলেন এবং হনুমান তার ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। হনুমানের জন্ম অঞ্জনাকে তাঁর অভিশাপ থেকে মুক্তি দেয়। এমনটি ঘটেছিল যে বায়ু এই ঘটনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
একবার, রাজা দশরথ তাঁর বংশের জন্য একটি যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন এবং সেখানে তাঁকে কিছু প্রসাদ দেওয়া হয়েছিল যা তাঁর তিন স্ত্রীর মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একটি পাখি সেই প্রসাদের একটি অংশ কেড়ে নিয়ে উড়ে যায় এবং প্রসাদটি একটি বনে ফেলে দেয়। এটি বায়ু দেবতার সহায়তায় ধ্যানে মগ্না অঞ্জনার কোলে পড়ে যায়। এইভাবে হনুমান পবন পুত্র হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন।
হনুমান চালিশা পড়ার সঠিক সময়
হনুমান চালিসা পড়ার সঠিক নিয়ম
সাধারণত লোকমুখে প্রচারিত নিয়মিত এই চালিসা পাঠ করে থাকেন হনুমান ভক্তরা। যাঁরা প্রথমবার এই চালিসা পাঠ করতে চলেছেন, তাঁরা মঙ্গলবার দিনটিকে বেছে নিন।
ভাল ফল পাওয়ার জন্য হনুমান চালিসা পড়ার সময় কিছু নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন। যেমন -
- সাধারণত সকাল বেলা স্নান সেরে, পরিশুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করে হনুমান চালিশা পাঠ করা উচিৎ। যদি কখনো সন্ধ্যায় হনুমান চালিশা স্তব জপ করতে হয়, তাহলে হাত, পা, মুখ সঠিকভাবে ধুঁয়ে পরিষ্কার বস্ত্রে জপ শুরু করতে পারেন।
- হনুমান চালিসা পড়ার জন্য একটি শান্ত ও পবিত্র স্থানে যেমন মন্দির, পূজা ঘর ইত্যাদি জায়গায় কুশ বা অন্য কোনও আসনে বসে নিবেদন করুন।
- পাঠ শুরু করার আগে একটি প্রদীপ এবং ধূপকাঠি জ্বালাবেন। চাইলে ভগবান হনুমানকে ফুল এবং প্রসাদ (মিষ্টি) নিবেদন করতে পারেন।
- আর এই চালিসা পাঠ শুরু করার আগে সর্বদা গণেশের আরাধনা করবেন।
- এর পরে সীতা ও রামকে স্মরণ করে ভগবান হনুমানকে প্রণাম করুন।
- এর পর ভগবান হনুমানকে ফুল অর্পণ করে হনুমান চালিসার পাঠ শুরু করুন।
- এই চালিসা পাঠের সময় পূর্ণ ধারাবাহিকতা এবং প্রতিটি শব্দটি স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করুন।
- বজরংবলী রামের ভক্ত হওয়ায় চালিসা পাঠ হয়ে যাওয়ার পর ভগবান রামের স্মরণ করুন।
হনুমান চালিশা পাঠের উপকারিতা
আপনি যদি পূর্ণ ভক্তি সহকারে নিয়মিত হনুমান চালিশা পাঠ করেন তাহলে আপনার সমস্ত ইচ্ছা পূরণ হতে পারে। যেমন -
- ভগবান হনুমান আপনার পথে আসা সমস্ত বাধা সরিয়ে একটি মসৃণ জীবনযাপন করতে সাহায্য করবে।
- প্রতিদিন সকালে হনুমান চালিশা পাঠ করেন মানসিক চাপ বা অবসাদ বা ভয় থেকে মুক্ত হওয়া যায়।
- কোনও যাত্রার আগে হনুমান চালিশা পাঠ করলে ওই যাত্রায় সব রকমের দুর্ঘটনা এড়ানো যায় বলে বিশ্বাস করা হয়।
- হনুমান চালিশা পাঠ করলে বিদেহী আত্মা, নেতিবাচক বা নেগেটিভ এনার্জি দূর হয়ে যায়।
- কর্মক্ষেত্রে সাফল্য লাভ, অর্থ সমস্যা দূর হয় হনুমান চালিশা পাঠ করলে।
- নিয়মিত হনুমান চালিসা পাঠ মোক্ষ লাভের কার্যকর উপায়।
উপসংহার
সম্পূর্ণ হনুমান চালিশা বাংলা PDF (Hanuman Chalisa In Bengali pdf)
সম্পূর্ণ হনুমান চালিশা বাংলা লিরিক্স (Hanuman Chalisa Lyrics In Bengali)
॥ দোহা ॥
শ্রীগুরু চরণ সরোজ রজ নিজ মন মুকুরু সুধারি।
বরনউ রঘুবর বিমল জসু জো দায়কু ফল চারি॥ ১॥
বুদ্ধিহীন তনু জানিকে সুমিরোঁ পবনকুমার।
বল বুধি বিদ্যা দেহু মোহিঁ হরহু কলেস বিকার॥ ২॥
॥ চৌপাঈ ॥
জয় হনুমান জ্ঞান গুন সাগর।
জয় কপীস তিহুঁ লোক উজাগর॥ ১ ॥
রাম দূত অতুলিত বল ধামা।
অঞ্জনি পুত্র পবনসুত নামা॥ ২॥
মহাবীর বিক্রম বজরঙ্গী।
কুমতি নিবার সুমতি কে সঙ্গী॥ ৩॥
কাঞ্চন বরণ বিরাজ সুবেসা।
কানন কুণ্ডল কুঞ্চিত কেশ॥ ৪॥
হাথ বজ্র ঔ ধ্বজা বিরাজৈ।
কাঁধে মূঁজ জনেউ সাজৈ॥ ৫॥
শঙ্কর সুবন কেশরী নন্দন।
তেজ প্রতাপ মহা জগ বন্দন॥ ৬॥
বিদ্যাবান গুণী অতি চতুর।
রাম কাজ করিবে কো আতুর॥ ৭॥
প্রভু চরিত্র শুনিবে কো রসিয়া।
রাম লখন সীতা মন বসিয়া॥ ৮॥
সূক্ষ্ম রূপ ধরী সিয়হিঁ দিখাবা।
বিকট রূপ ধরি লঙ্কা জরাবা॥ ৯॥
ভীম রূপ ধরি অসুর সঁহারে।
রামচন্দ্র কে কাজ সঁবারে॥ ১০॥
লায় সঞ্জীবনি লখন জিয়ায়ে।
শ্রীরঘুবীর হরষি উর লায়ে॥ ১১॥
রঘুপতি কিন্হী বহুত বড়াঈ।
তুম মম প্রিয় ভরতহি সম ভাই॥ ১২॥
সহস বদন তুমহরো জস গাবৈঁ।
অস কহি শ্রীপতি কন্ঠ লগাবৈঁ॥ ১৩॥
সনকাদিক ব্রহ্মাদি মুনীশা।
নারদ শারদ সহিত অহীশা॥ ১৪॥
যম কুবের দিগপাল জহাং তে।
কবি কোবিদ কহি সকে কহাং তে॥ ১৫॥
তুম উপকার সুগ্রীবহি কীন্হা।
রাম মিলায় রাজপদ দীন্হা॥ ১৬॥
তুম্হরো মন্ত্র বিভীষণ মানা।
লংকেশ্বর ভয়ে সব জগ জানা॥ ১৭॥
য়ুগ সহস্র যোজন পর ভানু।
লীল্য়ো তাহি মধুর ফল জানু॥ ১৮॥
প্রভু মুদ্রিকা মেলি মুখ মাহী।
জলধি লাংঘি গয়ে অচরজ নাহী॥ ১৯॥
দুর্গম কাজ জগত কে জেতে।
সুগম অনুগ্রহ তুম্হরে তেতে॥ ২০॥
রাম দুয়ারে তুম রখবারে।
হোত ন আজ্ঞা বিনু পৈসারে॥ ২১॥
সব সুখ লহৈ তুম্হারী শরণা।
তুম রক্ষক কাঁহু কো ডর না॥ ২২॥
আপন তেজ তুম্হারো আপৈ।
তীনোং লোক হাংক তে কাংপৈ॥ ২৩॥
ভূত পিশাচ নিকট নহি আবে।
মহবীর জব নাম সুনাবে॥ ২৪॥
নাসৈ রোগ হরৈ সব পীরা।
জপত নিরংতর হনুমত বীরা॥ ২৫॥
সংকট সেং হনুমান ছুড়াবৈ।
মন ক্রম বচন ধ্য়ান জো লাবৈ॥ ২৬॥
সব পর রাম তপস্বী রাজা।
তিনকে কাজ সকল তুম সাজা॥ ২৭॥
ঔর মনোরধ জো কোয়ি লাবৈ।
তাসু অমিত জীবন ফল পাবৈ॥ ২৮॥
চারো যুগ পরিতাপ তুম্হারা।
হৈ পরসিদ্ধ জগত উজিয়ারা॥ ২৯॥
সাধু সন্ত কে তুম রখবারে।
অসুর নিকন্দন রাম দুলারে॥ ৩০॥
অষ্ঠসিদ্ধি নব নিধি কে দাতা।
অস বর দীন্হ জানকী মাতা॥ ৩১॥
রাম রসায়ন তুম্হারে পাসা।
সাদ রহো রঘুপতি কে দাসা॥ ৩২॥
তুম্হরে ভজন রামকো পাবৈ।
জনম জনম কে দুখ বিসরাবৈ॥ ৩৩॥
অন্ত কাল রঘুবর পুরজায়ী।
জহাঁ জনম হরিভক্ত কহায়ী॥ ৩৪॥
ঔর দেবতা চিত্ত ন ধরয়ী।
হনুমত সেয়ি সর্ব সুখ করয়ী॥ ৩৫॥
সংকট কটৈ মিটৈ সব পীরা।
জো সুমিরৈ হনুমত বল বীরা॥ ৩৬॥
জৈ জৈ জৈ হনুমান গোঁসাই।
কৃপা করো গুরুদেব কী নায়ী॥ ৩৭॥
যো শত বার পাঠ কর কোয়ী।
ছূটহি বন্দি মহা সুখ হোয়ী॥ ৩৮॥
যো ইয়েহ পড়ে হনুমান চালীশা।
হোয় সিদ্ধি সাখী গৌরীশা॥ ৩৯॥
তুলসীদাস সদা হরি চেরা।
কীজৈ নাথ হৃদয় মহ ডেরা॥ ৪০॥
॥ দোহা ॥
পবন তনয় সঙ্কট হরণ – মঙ্গল মূরতি রূপ।
রাম লখন সীতা সহিত – হৃদয় বসহু সুরভূপ॥ ১॥
সিয়াবর রামচন্দ্রকী জয় | পবনসুত হনুমানকী জয় | বোলো ভাই সব সঁন্তোকী জয় |
🙏🙏🙏
Post a Comment